রামু সংবাদদাতা
রামুতে বিকেএসপি’র জন্য জমি অধিগ্রহণ নিয়ে ভূমি মালিকদের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। কক্সবাজার চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও বাজারের পার্শ¦বর্তী হওয়ায় অধিগ্রহনের জন্য প্রক্রিয়াধিন জমির মূল্য বর্তমানে অনেক বেশী। কিন্তু সরকারিভাবে অধিগ্রহনে নির্ধারিত সেই মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এখানকার জমির শত শত মালিক। এ নিয়ে ক্ষুব্দ জমির মালিকরা মৌজা দরের তিনগুন হারে মূল্য প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।

জানা গেছে, রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের নোনাছড়ি মৌজার ৭৫ কানি জমিতে বিএসপি প্রতিষ্ঠার জন্য সাম্প্রতিক সময়ে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। এসব জমির প্রতিকানি মৌজা মূল্য ৭ লাখ ৮০ হাজার ৩২০ টাকা। সম্প্রতি জমির মালিকদের দেয়া ৭ ধারার নোটিশ মতে এখানকার ভুমি মালিকরা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন মৌজা মূল্যের দেড়গুন। অর্থাৎ কানি প্রতি জমির মূল্য নির্ধারিত হয়েছে ১১ লাখ ৭০ হাজার ৪৮০ টাকা।

অধিগ্রহনে প্রক্রিয়াধিন জমির মালিকদের মধ্যে মৃত ইব্রাহিম খলিলের ছেলে রফিক আহমদ, মৃত মুফিজুর রহমানের ছেলে আবদু শুক্কুর, মৃত নুর আহমদের ছেলে হালিম রায়হান, মৃত ফরোকুর রহমানের ছেলে জাবেরুল কালাম জানান, বর্তমান বাজারে এখানকার জমির কানিপ্রতি মূল্য প্রায় ২০ থেকে ৫০ লাখ টাকা।

একারনে সরকারিভাবে যে মূল্য দেয়া হচ্ছে তা নিয়ে তাদের মতো অধিগ্রহনের আওতায় পড়া শত শত জমি মালিকদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। ৩ ফসলা এসব জমির এ স্বল্প মূল্য নিয়ে জমির মালিকরা কিভাবে জীবন পার করবেন তা নিয়ে রয়েছে দূশ্চিন্তায়।

স্থানীয় কৃষক আবু তাহের, রশিদ আহমদ, মো. কালু, এজাহার মিয়া জানান, এসব জমি অধিগ্রহনের পর তাদের মতো অনেক কৃষক পরিবারকে জীবিকার প্রধান উৎস হারাতে হবে। সে অনুযায়ি যে মুল্য দেয়া হচ্ছে তা নিয়ে কেউ জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে না।

এনিয়ে ক্ষুব্দ জমির মালিক ও কৃষকদের দাবি জমি অধিগ্রহনের প্রাথমিক পর্যায় থেকে তারা মৌজা মূল্য কম হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনগুন হারে মুল্য চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন জানিয়েছিলেন। সবাই ভেবেছিলো চূড়ান্ত অধিগ্রহনের নোটিশে তিনগুন মুল্য দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ থাকবে। কিন্তু সম্প্রতি তারা ৭ ধারার নোটিশ পেয়ে হতাশায় ভেঙ্গে পড়েন।

কারন ওই নোটিশে মৌজা মূল্যের দেড়গুন করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা বলা হয়েছে। তাই তারা এসব নোটিশ অবিলম্বে প্রত্যাহার করে জনস্বার্থে তিনগুন মূল্য প্রদানের দাবি জানান।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, এখানে বিকেএসপি নির্মাণের খবরে এলাকার জনসাধারণ উল্লসিত হয়েছিলো। কিন্তু মূল্যবান জমি কমদামে অধিগ্রহনের খবরে গ্রামবাসীর সেই আনন্দ এখন আর নেই। দুবছর পূর্বে এখানকার জমি কানি প্রতি ১৬ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন সেই দাম আরো অনেক বেড়েছে। তাছাড়া পার্শ্ববর্তী মৌজায় জমির মৌজা মূল্য ৯০ লাখ টাকারও বেশী। পাশাপাশি জমির এত ব্যবধানের ফলে জমির মালিকরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই এলাকার সর্বস্তুরের মানুষের দাবি জমির মালিকদের স্বার্থ বিবেচনা করে যেন মৌজা মূল্যে তিনগুন মূল্য প্রদান করা হয়। এজন্য জেলা প্রশাসন সহ সরকারের উর্দ্ধতন মহলের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তারা।